1. joyantagoswami7165@gmail.com : Joyanta Goswami : Joyanta Goswami
  2. faisalyounus1990@gmail.com : Developer :
  3. newspointsylhet@gmail.com : News Point : News Point
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২২ অপরাহ্ন

নিউজ পয়েন্ট সিলেট

বৃহস্পতিবার, ২৫ মার্চ, ২০২১

ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞের দিন ২৫ মার্চ- গণহত্যা দিবস


আজ ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞের দিন ২৫ মার্চ- গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের আজকের এইদিন মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানী হানানদার বাহিনী তাদের পূর্ব পরিকল্পিত অপারেশন সার্চলাইটের নীলনকসা অনুযায়ী আন্দোলনরত বাঙালীদের কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার ঘৃণ্য উদ্দ্যোশে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নিরস্ত্র বাঙালীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ চালায়।
একাত্তেরর ২৫ মার্চের গণহত্যা শুধু একটি রাতের হত্যাকান্ডই ছিল না, এটা ছিল মূলত বিশ্ব সভ্যতার জন্য এক কলঙ্কজনক জঘন্যতম গণহত্যার সূচনা মাত্র।
একাত্তরে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর গণহত্যার দিনটি জাতীয় ভাবে স্বীকৃতি দিয়ে দিবসটি  গণহত্যা দিবস হিসাবে পালিত হয়। মধ্যরাত থেকেই নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিবসটি পালিত হয়।
অক্সফোর্ড ডিকশনারী অনুযায়ী গণহত্যাকে সংজ্ঞায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিন সংসদে বলেন, ‘জাতিসংঘ ১৯৪৮ সালের ৯ ডিসেম্বর ‘জেনোসাইড কনভেনশন’ গ্রহণ করে। ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বরকে ‘জেনোসাইড ডে’ হিসেবে ঘোষণা দেয়। কাজেই আমাদের কাছে সেই সুযোগ রয়েছে, জাতিসংঘের কনভেনশন অনুযায়ী আমরা ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে গ্রহণ করতে পারি।’
সংসদ কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ বিধিতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) শিরীন আখতারের আনা প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনা শেষে সংসদে তা সর্বসম্মতভাবে গ্রহণ করা হয়। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব করলে সংসদ তা পাস করে। পরে ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত মন্ত্রীসভার বৈঠকে ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ ঘোষণা এবং জাতীয় ও আর্ন্তজাতিকভাবে দিবসটি পালনের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয় । দিবসটিকে ‘ক’ শ্রেণীভুক্ত দিবস অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব মন্ত্রীসভায় অনুমোদন করা হয় ।

নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ভিন্ন মাত্রায় পালিত হবে ২৫ মার্চ-জাতীয় গণহত্যা দিবস। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক- সাংস্কৃতিক সংগঠন এ উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সারাদেশে সভা, সমাবেশ, র‌্যালি, আলোকচিত্র প্রদশর্নীসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালন করার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ সকল সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ও দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

অস্ট্রেলিয়ার “সিডনি মর্নিং হেরাল্ড” পত্রিকার ভাষ্যমতে শুধুমাত্র পঁচিশে মার্চ রাতেই বাংলাদেশে প্রায় এক লক্ষ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, যা গণহত্যার ইতিহাসে এক জঘন্যতম ভয়াবহ ঘটনা। পরবর্তী নয় মাসে একটি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার লক্ষ্যে ৩০ লাখ নিরপরাধ নারী-পুরুষ-শিশুকে হত্যার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা পূর্ণতা দিয়েছিল সেই বর্বর ইতিহাসকে।
১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের কাছে পাকিস্থানীরা ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের প্রক্রিয়া চলাকালে পাকিস্তানি সেনারা কুখ্যাত ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নাম দিয়ে নিরীহ বাঙালী বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা শুরু করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতা-কর্মীসহ সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা।
পাকিস্তানি হায়েনাদের কাছ থেকে রক্ষা পায়নি রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও। ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব ও জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মনিরুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৯ জন শিক্ষককে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। ঢাবির জগন্নাথ হলে চলে নৃশংসতম হত্যার সবচেয়ে বড় ঘটনাটি। এখানে হত্যাযজ্ঞ চলে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত।
বিশিষ্ট নজরুল গবেষক ও বাংলা একাডেমীর সাবেক পরিচালক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নীলক্ষেত আবাসনের ২৪নং বাড়িতে। ওই বাড়ির নিচে দুপায়ে গুলিবিদ্ধ দুই মা তাদের শিশু সন্তানকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সিঁড়ি ভেসে যাচ্ছিল তাদের রক্তে। পাক হায়নাদাররা ভেবেছিল অন্য কোন দল হয়ত অপারেশন শেষ করে গেছে। তাই তারা আর ওই বাড়িতে ঢোকেনি। অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম তখন প্রাণে বেঁচে যান।প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অপারেশন সার্চ লাইট পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সকল পদক্ষেপ চুড়ান্ত করে গোপনে ঢাকা ত্যাগ করে করাচি চলে যান।
সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার পাকিস্তানী বাহিনী বাঙালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের আগে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং শেষ শত্রু বিদায় না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবার আহ্বান জানান।
বঙ্গবন্ধুর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালীরা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং রক্তক্ষয়ী দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র লড়াই শেষে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পূর্ণ বিজয় অর্জন করে। বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে লাল সবুজের বিজয় নিশান পতাকাবাহী রাষ্ট্র বাংলাদেশের।

আপনার মতামত দিন
এই বিভাগের আরও খবর

সিলেটের সর্বশেষ
© All rights reserved 2020 © newspointsylhet