নিউজ পয়েন্ট সিলেট
বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ, ২০২২
সময়ের ব্যবধানে সবই পাল্টে যায় কিন্তু কিছু কর্মের স্মৃতি কিছু ঘটনা সব সময় মানুষের মনে আজীবন রয়ে যায়। যে সব মহৎ কর্ম সব সময় মানুষকে প্রেরনা জোগায়, সামনে চলার পথ দেখিয়ে দেয়। যারা সে সব মহৎ কর্ম করে মানুষকে পথ নির্দেশ করে দেন তারাই মহৎ প্রান মানুষ। সিলেটের সে সব মহৎ প্রান মানুষের ভীড়ে সাবেক সফল সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। যার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও গতিশীল কার্যক্রম সিলেট ৩ আসনের মানুষের মনে আজীবন স্বমহিমায় চির জাগরুক হয়ে থাকবে। রাজনীতি সমাজনীতি আর উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় তার অবদান যুগ যুগ ধরে গোটা নির্বাচনী এলাকার জনগন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ রাখবে।
সিলেট-৩ আসনের তিন বারের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মাহমুদ-উস সামাদ চৌধুরী কয়েস চলে যাওয়ার এক বছর আজ । গত বছরের ১১ মার্চ ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিলেটের সর্বজন শ্রদ্দেয় এ রাজনীতিবিদ চলে যান না ফেরার দেশে। মরনঘাতি ভাইরাস করোনা তাঁকে কেড়ে নেয় প্রিয়জনদের কাছ থেকে চিরদিনের জন্য । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৬৬ বছর।
গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে টিকা নেন মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। তারপর কোনো শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছিল না। তবে টিকা নেওয়ার দুই সপ্তাহ পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ৭ মার্চ সিলেট থেকে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। ওই দিন রাতে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন সকালে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন তিনি। বিকালে তার ফলাফল পজিটিভ আসে। এরপর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ মার্চ বেলা ২টা ৪০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী।
তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো সিলেটে শোকের ছায়া নেমে আসে। তাঁর দীর্ঘ জীবনের রাজনৈতিক সহযোদ্ধা, সুহৃদ-স্বজনসহ দল-মত নির্বিশেষ মানুষজন ছুটে যান ফেঞ্চুগঞ্জস্থ তাঁর নুরপুরের গ্রামের বাড়িতে।
মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েসের মরদেহ মৃত্যুর ঢাকা থেকে পরদিন (১২ মার্চ) দুপুরে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। ওই দিন সকাল থেকে বিভিন্ন স্থান থেকে এমপি’র এলাকায় মানুষের আগমন শুরু হয়। পরে বিকেল সোয়া ৫টায় ফেঞ্চুগঞ্জের কাশিম আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ফেঞ্চুগঞ্জের কাশিম আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েসের জানাযা সম্পন্ন হয়। জানাজা শেষে বাড়ির সামনে পারিবারিক কবরস্থানের তাঁকে দাফন করা হয়।
জানাযা ও দাফনের আগে দিনভর দলীয় নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মাহমুদ উস সামাদের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন সবাই। সেদিন সেখানে এক হৃদয়বিদার দৃশ্যের অবতারণা হয়।
১৯৫৫ সালের ৩ জানুয়ারি ফেঞ্চুগগঞ্জে জন্ম নেওয়া মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৩ আসন থেকে প্রথমবারের মত সংসদ নির্বাচিত হন। এরপর দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করেন তিনি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী জাতীয় মহান সংসদের প্যানেল স্পিকার , প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদিশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং শেখ রাসেল শিশু কিশোর পরিষদের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন।
পরিশেষে এ মহান জনবান্ধব রাজনীতিবিদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং শোকাবহ পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করছি।