বোমা হামলার ঘটনায় মার্কিন সেনা ছাড়াও নিহত হয়েছেন আফগান সেনারা। এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন বাইডেন। নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সারা দেশে পতাকা অর্ধনমিত ও কিছু সময়ের জন্য নীরবতা পালন করে হোয়াইট হাউসে উপস্থিতরা। এরপর দুঃখভারাক্রান্ত বাইডেন বলেন, ‘কে এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা অজানা নয়। আমরাও প্রতিক্রিয়াশীল হব, যখন আমাদের সময় আসবে। ক্ষমা করব না, আমরা এই হামলার কথা ভুলেও যাব না। হামলাকারীদের অবশ্যই খুঁজে বের করব এবং কঠোর প্রতিশোধ নেব।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘জঙ্গিরা জিতবে না, এই লড়াইয়ে আমরাই জিতব। কারণ আমরা তাদের ভয় পাই না। ওরা আমাদের কিছুই করতে পারবে না। এর আগেই আমরা সেনাদের সেখান থেকে সরিয়ে আনব।’
বাইডেনের এই প্রতিশোধ নেওয়ার কথা জানানোর আগে সৈন্য সরিয়ে নেওয়া যিনি দেখভাল করছেন সেই গেন ম্যাককেঞ্জি বলেন, ‘আফগান ও মার্কিন সেনা নিহতের ঘটনায় আমরা শোকাহত। দ্রুতই আমরা সেনা সরিয়ে নিচ্ছি। বৃহস্পতিবার সরানোর কথা ছিল প্রায় ৫০০০ সৈন্য।’
কথা রয়েছে ৩১ আগস্ট প্রায় সব মার্কিন সেনা আফগানিস্তান ছাড়বে। তার আগে মার্কিনিদের মতো অনেক আফগানিস্তানিও দেশ ছাড়তে চান। এরই মধ্যে লোকজনকে সরিয়ে নিতে ব্যাপক কর্মযজ্ঞের মধ্যেই সম্ভাব্য হামলার সতর্কতা জারি করেছিল পশ্চিমা দেশগুলো। বিমানবন্দর এড়িয়ে চলতে নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে বেশ কয়েকটি দেশ। এক কর্মকর্তা বলেন, সেখানে আত্মঘাতী হামলার ঝুঁকি রয়েছে। এর আগে কাবুল বিমানবন্দরে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় সেখানে না যেতে নাগরিকদের প্রতি সতর্কতা জারি করে যুক্তরাষ্ট্রসহ তাদের মিত্রদেশগুলো। জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট হামলা চালানোর হুমকি দেয়ায় এই সতর্কতা জারি করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের হিসাব মতে, ১৪ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত ৮২ হাজারের বেশি মার্কিন ও আফগান নাগরিক কাবুল ছাড়তে সক্ষম হয়েছে। এখনো আফগানিস্তান ছাড়ার অপেক্ষায় আছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। যতই দিন গড়াচ্ছে ততই আফগানদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। উত্তাল আফগানিস্তান থেকে নিজেদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়া অব্যাহত রেখেছে মেক্সিকো, লিথুয়ানিয়াসহ বিভিন্ন দেশ।
কাবুল বিমানবন্দরে মানবেতর পরিস্থিতি তৈরি হলেও তালেবানের হাতেই নিজেদের সপে দিতে শুরু করেছেন অনেক আফগান নাগরিক। তালেবানের হাতে আফগানিস্তান চলে যাওয়ার দুই সপ্তাহ হতে চলেছে। নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। তবে ১০ দিন ধরে ব্যাংক বন্ধ থাকায় অর্থনৈতিক মন্দার পাশাপাশি খাদ্য সংকট চরমে পৌঁছেছে।
এদিকে তালেবানের হাতে শাসনভার চলে গেলেও তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করছেন কাবুলের উত্তরাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকা পাঞ্জশিরের মানুষ। এরই মধ্যে সরকারি বাহিনীর অবশিষ্ট সদস্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে অঞ্চলটির তালেবানবিরোধী সশস্ত্রগোষ্ঠীগুলো। পাঞ্জশিরে তালেবানের বিরুদ্ধে তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে।