
নিউজ পয়েন্ট সিলেট
রবিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২০
নিউজ পয়েন্ট ডেস্ক:: কক্সবাজারের উখিয়ায় এক রোগীকে ১৭টি ঔষধ লিখে দেওয়া ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এ নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নানান প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, ৯ অক্টোবর রাতে এক নারী রোগীকে ওই ব্যবস্থাপত্রটি দেন উখিয়ার কোটবাজারের বেসরকারী অরিজিন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এ. এস. এম তৌহিদুজ্জামান। এতে ইনজেকশনসহ ১৭টি ঔষধ সেবনের পরামর্শ দেন তিনি।
এরপর পরামর্শপত্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
রুহুল আমিন একজন বলেছেন, ডাক্তার ইস রাইট। ওই নারী অনেক সমস্যায় জর্জরিত এক রোগী। তার লাংস, হার্ট, লিভার, এ্যাজমা ও ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে। সনজিত বড়ুয়া নামে একজন লিখেছেন, ওষুধ খেলে হবে, ভাত খেতে হবে না। তাহলে কিছু টাকা সাশ্রয় হবে। ধন্যবাদ ১০ রোগের অভিজ্ঞ ডাক্তার।
ডা. অখিল সরকার লিখেছেন, প্রেসক্রিপশন দেখে মনে হচ্ছে উক্ত রোগীর ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের অসুখ, শ্বাসকষ্টসহ অনেকগুলো ক্রনিক ডিজিজ আছে। এই জন্য হয়ত বেশি ওষুধ দিতে হয়েছে এবং সবগুলো অসুখই অনিরাময়যোগ্য বলে অনেক ওষুধ সারাজীবন খেয়ে যেতে হবে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তারদেরও এত ঔষধ লিখতে অসহায় হয়ে যেতে হয়। রোগীর ভালোর থাকার প্রয়োজনে খারাপ লাগলেও অনেক ওষুধ লিখতে হয়।
জানতে চাইলে ওই রোগী বলেন, আমি ডাক্তার রবিউল ইসলাম রবির একজন নিয়মিত রোগী। ওই দিন হঠাৎ আমার শ্বাসকষ্টসহ উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে গেলে ডা. রবির অনুপস্থিতিতে চিকিৎসা সেবা দেন ডা. এ. এস. এম তৌহিদুজ্জামান। তার পরামর্শপত্র অনুযায়ী ওষুধ সেবন করে বর্তমানে আমি সুস্থ আছি। কে বা কারা আমাকে দেওয়া প্রেসক্রিপশন ফেইসবুকে পোস্ট করেছে, তা আমি জানিনা। বিষয়টি দুঃখজনক।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অরিজিন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এ. এস. এম তৌহিদুজ্জামান বলেন, মূলত ওই রোগীকে নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন ডাক্তার রবিউর রহমান রবি। ওই দিন রবি স্যারের অনুপস্থিতিতে তার পূর্বের প্রেসক্রিপশন দেখে শুধুমাত্র দুটি ওষুধ যোগ করি। তা ছাড়া ওই রোগীর বেশকিছু সমস্যা রয়েছে যা নিয়মিত ওষুধ সেবন না করলে জীবনের ঝুঁকি রয়েছে।
অরিজিন হাসপাতালের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল করিম বলেন, হাসপাতালটি গ্রামীণ জনপদের সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি করোনাকালীন ডাক্তার, নার্স জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরবচ্ছিন্ন চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তবে কোন রোগীকে অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ ওষুধ দিয়ে হয়রানি করা আমাদের লক্ষ্য নয়। হয়ত উক্ত রোগীর বিভিন্ন রোগের সমস্যার কারণে নিশ্চয় অভিজ্ঞ ডাক্তার সার্বিক দিক বিবেচনা করে ওষুধগুলো লিখেছেন।
এ প্রসঙ্গে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রঞ্জন বড়ুয়া রাজন বলেন, রোগের ধরণ ভেদে ৪০টি পর্যন্ত ওষুধ দেয়া যায়। তবে এক্ষেত্রে কী কারণে এত ওষুধ লিখেছেন তা একমাত্র তিনি জানেন।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহবুব রহমান বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত নন। তবে এ বিষয়ে রোগী যদি অভিযোগ করেন তাহলে এক্ষেত্রে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।