সন্দীপন তালুকদার সুজন, শাল্লা
বুধবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৩
সুনামগঞ্জের শাল্লায় গত ৭দিনের টানা ভারী বর্ষণে মানবজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দিন মজুরী মানুষগুলো। এছাড়াও অতি বৃষ্টিতে আমন ধান ও মৌসুমী বিভিন্ন জাতের শাক-সবজির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এর প্রভাবে বাজারে শাক-সবজির মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। টানা বর্ষণের ফলে রাস্তাঘাটের অবস্থাও নাজুক মানুষজন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষকদের মতে, ভারী বর্ষণ হওয়ায় আমন ধান প্রায় ২৫০ বিঘা জমি সম্পুর্ন পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ডাটাশাক, করলা, পুইশাক, মরিচের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। এগুলো পুনরায় নতুন করে ফলানোর সুযোগ নেই। অর্থাৎ গাছগুলো ভেঙ্গে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। সবজি ক্ষেতে পানি জমায় গাছগুলো পঁচে মারা যাচ্ছে।
শাল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের তথ্যানুসারে, শাল্লায় ৫হেক্টর রোপা আমন ধানের জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সবজিরও ক্ষতি হয়েছে। আরও বৃষ্টিপাত হলে ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে যেগুলো ক্ষতি হয়েছে সেগুলোর তালিকা করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে এবং প্রণোদনা আসলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা পাবেন।
সবজি চাষী আনু মিয়া জানান, একটানা বৃষ্টিপাতের কারনে আমাদের সবজি বাগানে পানি জমাট থাকে। পেঁপে, শিম, মিষ্টিকুমড়া সহ বিভিন্ন জাতের শাকসবজির গাছ মারা যাচ্ছে। এতে আমরা মারাত্মক ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছি।
কৃষক দুলন বৈষ্ণব বলেন, আমার আমন ধানের জমিগুলো সবই পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আর ডাঁটাশাক, পুঁইশাক ও করলা জমিতে পানি উঠায় সবজির গাছগুলো মরে যাচ্ছে। আমি এবার সর্বশান্ত হয়ে যাব।
শ্যামল ও নৃপেশ নামে সবজি চাষী জানান, তিন বিঘা জমিতে বিন্দু মরিচের ফলন করেছিলাম। কিন্তু অতিবৃষ্টি ও প্রকৃতির নিষ্ঠুর আচরণের জন্য মরিচ গাছ নষ্ট হওয়াতে আমরা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত।
সবজি ক্রেতা নিশিকান্ত জানান, অতিরিক্ত বৃষ্টির জন্য সবজি বাজারে আসছে না। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী সবজি না পাওয়ায় দাম বেশি নিচ্ছে বিক্রেতারা।
এই ব্যাপারে শাল্লার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ তুষার বলেন, শাল্লায় ৫ হেক্টর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। যদি আর বৃষ্টি না হয় তাহলে অতিরিক্ত ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবেনা। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের তালিকা করে আমরা সরকারের প্রণোদনা ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের আওতাভুক্ত আনব।
এবিষয়ে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন, টানা বর্ষণে আমন ধান ডুবে যাচ্ছে ও সবজির ক্ষতি হচ্ছে। আমি কৃষি অফিসকে মনিটরিং করে জানানোর কথা বলছি। যেভাবে নির্দেশনা থাকবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করব।