1. joyantagoswami7165@gmail.com : Joyanta Goswami : Joyanta Goswami
  2. faisalyounus1990@gmail.com : Developer :
  3. newspointsylhet@gmail.com : News Point : News Point
শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ০৯:২৫ পূর্বাহ্ন

নিউজ পয়েন্ট সিলেট

সোমবার, ৫ এপ্রিল, ২০২১

৫ এপ্রিল ১৯৭১: এই দিন সেই সময় শত্রুমুক্ত হয় সিলেট শহর


ঢাকায় হানাদার পাকিস্তানি সামরিক শাসক ঘোষণা করে, “প্রদেশের পরিস্থিতি সশস্ত্র বাহিনীর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণাধীন রয়েছে। সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীদের (মুক্তিযোদ্ধাদের) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবলম্বন করা হচ্ছে। পাকিস্তান বিরোধীদের বিরুদ্ধেও যথোচিত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।”
করাচীতে পাকিস্তান পিপলস পার্টি প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো এক বিবৃতিতে বলেন, “শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান গঠন করতে চেয়েছিলেন। সেজন্যেই তিনি জাতীয় পরিষদের দুটি কমিটি গঠনের সুপারিশ করেছিলেন।”

এদিকে ঢাকায় কারফিউর মেয়াদ ভোর পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত শিথিল করা হয়। অন্যদিকে পাক সেনাদের নৃশংসতায় সীমান্ত পথে দেশত্যাগী মানুষের ঢল বেড়েই চলেছে।

পিডিপি প্রধান নুরুল আমিন এক বেতার ভাষণে ভারতীয় সংসদে প্রস্তাব গ্রহণের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “ভারত অনুপ্রবেশকারী পাঠিয়ে প্রকাশ্যে পূর্ব পাকিস্তানে বিদ্রোহ উস্কে দিচ্ছে। ভারতের ঘৃণ্য প্রচারণা সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এ সব কিছুই প্রমাণ করে অন্য দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি ভারতের ন্যূনতম সম্মানবোধও নেই।” নুরুল আমিন অযথা হস্তক্ষেপ সম্পর্কে ভারতকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, “দ্বিধাহীন চিত্তে বলতে চাই, আমাদের সার্বভৌমত্বের উপর অন্য কোনো দেশের হস্তক্ষেপ আমরা সহ্য করবো না।”

স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে দেয়া এক বিবৃতিতে পাকিস্তান মুসলিম লীগের (কাইয়ুম) সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল খান এ সবুর বলেন, “এটা এখন একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য যে, শেখ মুজিব এবং তার আওয়ামী লীগের ৬ দফা পূর্ব পাকিস্তানের সরল জনগণকে প্রতারণা করার একটা আবরণ ছিল মাত্র এবং প্রকৃতপক্ষে তা ছিল ফ্যাসিবাদী পন্থায় নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার সূক্ষ্ম চাল।” সবুর খান তার বিবৃতিতে সামরিক বাহিনীর বিভীষিকাময় হত্যাযজ্ঞকে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার ‘সময়োচিত ব্যবস্থা গ্রহণ’ বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, “সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের ফলেই পাকিস্তান রক্ষা পেয়েছে। সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ না করলে দুষ্কৃতকারীরা পাকিস্তান ধ্বংস করে দিতো।”

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি পদাতিক কোম্পানি যশোর থেকে কুষ্টিয়ার পথে বিষখালিতে মুক্তিবাহিনীর অ্যামবুশে পড়ে এবং সকল সৈন্যকে হারায়। এরপর পাকবাহিনী যশোর সেনানিবাস থেকে বিষখালিতে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি আক্রমণ করে। কিন্তু মুক্তিবাহিনীর পাল্টা আক্রমণে পাকসেনারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মুক্তিযোদ্ধারা শেরপুর-শাদীপুর এলাকায় পাকসেনাদের তুমুল যুদ্ধের পর পরাস্ত করে এবং পাকবাহিনীর কাছ থেকে এলাকাটি মুক্ত করে। এ যুদ্ধে তিন প্লাটুন পাকসৈন্যের অধিকাংশই মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে নিহত হয়। এখানে শহীদ হন তিনজন মুক্তিযোদ্ধা এবং আহত হন অসংখ্য।

সিলেটের সুরমা নদীর দক্ষিণ পারে এক খন্ড যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পাকবাহিনী পরাজিত হয় এবং তারা পালিয়ে গিয়ে শালুটিকর বিমান ঘাঁটিতে একত্র হয়। সুরমা নদীর সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল এবং উত্তর সিলেট শহর অঞ্চল শত্রুমুক্ত হয়।

রাত আটটায় মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা আক্রমণে যাত্রাবাড়ি রোডে পাকসেনা বোঝাই একটি গাড়ি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয়। পাকবাহিনী ১১টি গাড়ি নিয়ে ভূষিরবন্দরে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটির দিকে অগ্রসর হলে মুক্তিযোদ্ধাদের গুলির সম্মুখীন হয়। এতে পাকসেনারা সামনে অগ্রসর না হয়ে সৈয়দপুরে পিছু হটে।

দশ মাইল এলাকায় পাকিস্তানিদের সাঁজোয়া এবং গোলন্দাজ বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের উপর অতর্কিতে হামলা চালায়। শাহাদাৎবরণ করেন অনেক ইপিআর মুক্তিযোদ্ধা এবং আহত হন অনেকে। ভূমধ্য সাগরে ফ্রান্সের তৌলন বন্দরে অবস্থানরত পাকিস্তানি সাবমেরিন ‘মনগ্রো’র ১৩ জন বাঙালী নাবিক ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করে এবং গোপনে সাবমেরিন ত্যাগ করে।

পাহারতলী রেলওয়ে এলাকায় পাকসেনারা রেলের চীফ ইঞ্জিনিয়ার মোজাম্মেল চৌধুরী, একাউন্টস অফিসার আব্দুল হামিদ, এল.আর.খান এবং তাদের পরিবারের সদস্য ও ভৃত্যসহ মোট ১১ জন বাঙালিকে জবাই করে হত্যা করে।

আপনার মতামত দিন
এই বিভাগের আরও খবর

সিলেটের সর্বশেষ
© All rights reserved 2020 © newspointsylhet