নিউজ পয়েন্ট সিলেট
শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০
নিউজ পয়েন্ট ডেস্কঃ মাদারীপুরে শিবচরে আত্মীয়ের বিয়ে সেজেগুজে অংশগ্রহণ করায় কুলসুম বিবি (৩২) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী আব্বাস হাওলাদারের বিরুদ্ধে। গত ১২ ডিসেম্বর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের চরবাচামারা রফিজউদ্দিন সরদারের কান্দি গ্রামে এমন ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত শুক্রবার আব্বাস হাওলাদারের বড় ভাই ফজল হাওলাদারের মেয়ে সেলিনার বিয়ের অনুষ্ঠানে গৃহবধূ কুলসুম সেজেগুজে অংশগ্রহণ করেন। এতে প্রতিবন্ধী স্বামী তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এই ঘটনা নিয়ে শনিবার সকালে কুলসুমকে মারধর করেন তিনি। এসময় প্রতিবেশীরা কারণ জানতে চাইলে কুলসুম পুরো ঘটনাটিকে খুলে বলেন। এরপর প্রতিবেশীরা দুইজনের মিমাংসা করে দেন। কিন্তু ঘটনার জের ধরে রাতে আব্বাস হাওলাদার স্ত্রী কুলসুমের হাত-পা রশি দিয়ে বেধে বেধড়ক পেটান। এসময় স্বামীর নির্যাতনে কুলসুম জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এক পর্যায়ে আব্বাস কুলসুমের মৃত্যু নিশ্চিতে গলায় ছুরিকাঘাত করেন।
এসময় স্থানীয়রা গৃহবধূর চিৎকারে এগিয়ে এলে আব্বাস পালিয়ে যান। পরে কুলসুমকে গুরুতর অবস্থায় প্রথমে পাঁচ্চর রয়েল হাসপাতাল, এরপর ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু ঢাকা নেওয়ার আগে বৃহস্পতিবার ভোরে দুই সন্তানের জননী কুলসুমের মৃত্যু হয়।
তার মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পরলে স্বামীর পুরো পরিবার এলাকা ত্যাগের চেষ্টা করে। এসময় অভিযুক্ত আব্বাসের দুই ভাই জয়নাল ও আয়নালকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়াও কুলসুমের মৃতদেহ বৃহস্পতিবার দুপুরে মাদারীপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ব্যাপারে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এদিকে শিবচরের দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. এমদাদ হোসেন জানান, গৃহবধূর মৃত্যুর খবরে প্রতিবন্ধী আব্বাস ও তার পুরো পরিবার এলাকা ছেড়ে পালানো চেষ্টা করে। এসময় আব্বাসের দুই ভাই জয়নাল ও আয়নালকে আটক করেছে পুলিশ দেয় এলাকাবাসী।
ময়নাতদন্তের জন্য ওই গৃহবধূর মরদেহ পাঠানো হয়েছে মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালে। মূলত রসিকতার জন্যই প্রাণ দিতে হয়েছে কুলসুমকে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।