নিউজ পয়েন্ট সিলেট
মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২০
সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম হাসানঃ মৌলভীবাজারে শ্রীমঙ্গলে বাবার বাসা বিক্রির ৫০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন রাহিদ। এমন অভিযোগ করেছেন তাঁর ছোট ভাই সাবেক কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবিদ হোসেন তানভীর। মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিযোগ করেন।
তিনি জানান,রাহিদ তাদের পরিবারের ৭ ভাইয়ের মাঝে সবার বড় ভাইয়ের ছোট। পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে রাহিদ বাবার সকল অর্থ ও সম্পদের দেখাশোনা করতেন। শহরের বাসা বিক্রির ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার মধ্যে ৫০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে তার ভাই রাহিদ ঘরছাড়া রয়েছেন। রাহিদ বাবাকে ভয় দেখায় যে, বাসা বিক্রির টাকাগুলো তোমার কাছে থাকলে দুদক তোমাকে ধরে নিয়ে যাবে বলে টাকাগুলো তার ব্যাংক একাউন্টে জমা করে নিজের কব্জায় নিয়ে নেয়। পরবর্তিতে রাহিদ এই টাকার হিসাব দিতে তালবাহানা করে। টাকার হিসাব চাওয়া নিয়ে রাহিদ এর সাথে তাদের বিরোধ সৃষ্টি হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রতিবাদ করে জানান,গত ২ ডিসেম¦র তার ভাই রাহিদ এর প্ররোচনায় তাদের ভাগ্নি আসফিয়া শাহরিন আচল শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে তার বাবা আব্দুস ছালাম, চাচা শ্রীমঙ্গল শহরের মুরুব্বী বিশিষ্ট আওয়ামীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আবু শহিদ মো. আব্দুল্লাহসহ তাদের পরিবারের নামে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ, জমি জবর দখল, লাঠি সোটা নিয়ে হামলার চেষ্টা, অসামাজিক কর্মকান্ডের বিভিন্ন মিথ্যা ও মান হানিকর অভিযোগ করেছেন। তিনি জানতে চান আচল আড়াই কোটি টাকার মালিক হওয়ায় তিনি সরকারকে কি পরিমান কর প্রদান করেন এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে তাদের এই অর্থের হদিস বের করতে অনুরোধ করেন বিশেষ ভাবে।
তিনি আরও জানান তাদের দাদার উপজেলার রূপশপুর মৌজায় বারিধারা আবাসিক এলাকায় প্রায় ১১ একর সম্পদ রেখে যান। দেশের প্রচলিত আইন ও ইসলামী শরিয়া রীতি অনুযায়ী এসব সম্পদ সুষ্টু বন্টন না হওয়ায় এ নিয়ে আদালতে স্বত্ব মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন,তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারী শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়ন কার্যালয়ে স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উদ্যোগে এক সালিশ বৈঠকে তাদের বাবা, চাচার ক্রয়কৃত সম্পত্তি ১৫৭৮ নং দলিল তাং-২৮/০৮/৬৯ এর ১২ শতক ভূমির মূল্য বাবদ তাদের ভাগ্নি আসফিয়া শাহরিন আচলকে ৪৮ লক্ষ পরিশোধের রায় হয়। কিন্তু আচল টাকা না দিয়ে উল্টো তাদের নামে মিথ্যা মামলা ও বিভ্রান্তমূলক তথ্য উপস্থাপন করে সমাজে তাদের পরিবারের সুনাম নষ্ট করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক এ নেতা আরও অভিযোগ করেন,তার ভাই রাহিদ টাকার লোভে সে আচলের পিছু নেয়। আচল তার স্বার্থ হাসিল করার জন্য তার ভাইকে হাতে রাখে। বাবা মা ও পরিবারের সবাইকে নিয়ে তারা একত্রে বসবাস করলেও তার ভাই রাহিদ এর অপকর্মের কারণে আজ পরিবার ও সমাজ থেকে সে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে তিনি সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন রাহিদের বড় ভাই নাহিদ,তাদের চাচতো ভাই এ এফ এম হিমেল মেহতাব হোসেন পাপ্পু সহ অন্যান্যরা।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোওয়ার হোসেন রাহিদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সিলেট নিউজ পয়েন্ট কে জানান,তার ভাই তানভীর ভূয়া মিথ্যা,বানোয়াট অভিযোগ করেছে,বরং সে বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছে। পরিবারের টাকা আত্মসাৎ এর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান,পুরান বাসার টাকা বিক্রির বিষয়ে তার সাথে কোন লেনদেন হয়নি এবং তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। বাসা বিক্রি হয় ২০১৭ সালে আলাদা বাসা নেন ২০১৯ সালে তার বাবা ও ভাই তানভীর লেনদেন করেছে ,তিনি লেনদেনের ব্যাপারে কিছুই জানেননা বলে জানান মোবাইল ফোনে।