1. joyantagoswami7165@gmail.com : Joyanta Goswami : Joyanta Goswami
  2. faisalyounus1990@gmail.com : Developer :
  3. newspointsylhet@gmail.com : News Point : News Point
মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ১০:৩০ পূর্বাহ্ন

নিউজ পয়েন্ট সিলেট

মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই, ২০২১

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের আহ্বানে জাতিসংঘের অধিবেশন, গৃহীত প্রস্তাব পাশ


রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। সোমবার (১২ জুলাই) জেনেভায় মানবাধিকার পরিষদের ৪৭তম অধিবেশনে এই প্রস্তাব গৃহীত হয়।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: জাতিসংঘে সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাব পাস
মানবাধিকার পরিষদের চলমান অধিবেশনে বাংলাদেশের উদ্যোগে ইসলামিক সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) সদস্য দেশগুলোর পক্ষ থেকে ‘রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক প্রস্তাবটি পেশ করা হয়েছে। 

চার বছর পার হলেও বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ফেরত নিচ্ছে না মিয়ানমার। তাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের চাপে দফায় দফায় বৈঠক, প্রতিশ্রুতি আর প্রত্যাবাসন চুক্তিতেই সীমাবদ্ধ থেকেছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটি। 

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনের জেরে ২০১৭ সাল থেকে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন ১০ লাখের মতো রোহিঙ্গা। 

রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চলা গণহত্যার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা ও বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের দ্রুত রাখাইনে প্রত্যাবাসনের প্রস্তাবটি সোমবার জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে উঠে। 

এ ইস্যুতে বরাবরই বাংলাদেশের বিপক্ষে ভোট দেওয়া চীন-রাশিয়া এবারই প্রথম নীরব ছিল। 

জেনেভাস্থ জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, চীন-রাশিয়াসহ সব পক্ষকে ঐকমত্যে আনতে বাংলাদেশ প্রথম থেকেই কাজ করে আসছিল। একাধিকবার বৈঠক হয়েছে পরাশক্তিধর এসব দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে। 

অবশেষে কোনো রাষ্ট্রই এই রেজুলেশনের বিরোধিতা করেনি। যা বাংলাদেশের কূটনীতির একটি বড় অর্জন। ওআইসিভুক্ত রাষ্ট্রগুলো যেমন পাশে আছে, তেমনি পশ্চিমা দেশকেও পাশে পাচ্ছে বাংলাদেশ। 

কূটনৈতিক এ সাফল্যকে কাজে লাগিয়ে রোহিঙ্গাদের কার্যকর প্রত্যাবাসন চেয়ে রাশিয়া, চীন ও ভারতের সঙ্গে দ্রুতই আলোচনায় বসবে বাংলাদেশ। 

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীতে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন এ কথা জানান। মন্ত্রী উজবেকিস্তানে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ১৪ মে দেশ ছাড়বেন। 

এই সফরে পরাশক্তিসহ প্রতিবেশী ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে আলাদা আলাদা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন তিনি। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের গুরুত্ব এবং মিয়ানমারের নিষ্ক্রিয়তা তুলে ধরবেন বলে জানান আব্দুল মোমেন। 

মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগে এসব দেশের সহযোগিতার আহ্বান জানানো হবে বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী। ফলে ১৫ জুলাই থেকে উজবেকিস্তান সফর দিয়েই শুরু হচ্ছে জাতিসংঘের প্রস্তাব পাসের পর বাংলাদেশের জোর কূটনৈতিক তৎপরতা। 

প্রস্তাবটিতে নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়। এছাড়া তাদের মিয়ানমারে ফেরত যাওয়া পর্যন্ত এ গুরুভার বহনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আহবান জানানো হয়েছে। 

এতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নসহ সব ধরনের নির্যাতন, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থার আওতায় আনা ও তদন্ত প্রক্রিয়া জোরদার করার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়। 

এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এবং আন্তর্জাতিক আদালতে চলমান বিচার প্রক্রিয়াকেও সমর্থন জানানো হয়েছে। 

প্রস্তাবটিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চলমান সকল প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়ে এরূপ পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এখতিয়ারের কথা পুনর্ব্যক্ত করা হয়। 

এতে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারকে মিয়ানমার বিষয়ক ‘নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তথ্যানুসন্ধানী মিশনের’ সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের অগ্রগতির ওপর মানবাধিকার পরিষদ এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রতিবেদন উপস্থাপনের অনুরোধ জানানো হয়। 

এছাড়া এ প্রস্তাব গ্রহণের মধ্য দিয়ে ‘রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মূল কারণ’ বিষয়ে মানবাধিকার পরিষদে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়।   

অং সাং সু চিকে গৃহবন্দি করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটির অভ্যন্তরীন রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। চলছে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ। এই পরিস্থিতিতে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বিশ্বসম্প্রদায়ের আলোচনায় ভাটা পড়েছিল। 

জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে প্রত্যাবাসন ইস্যুটি গুরুত্বের সঙ্গে উঠে আসায় নতুন আলোর মুখ দেখবে বলে মনে করছেন কূটনীতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। দেশটিতে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ চললেও রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে এটি কোনো বাধা নয় বলে মনে করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
আপনার মতামত দিন
এই বিভাগের আরও খবর

সিলেটের সর্বশেষ
© All rights reserved 2020 © newspointsylhet