
নিউজ পয়েন্ট সিলেট
বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট, ২০২১
নিজ দেশ মিয়ানমারে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা প্রাণ ও মান বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়ার চার বছর পার হয়েছে গতকাল (২৫ আগস্ট)। নিপীড়িত রোহিঙ্গারা স্থল ও জলসীমান্ত অতিক্রম করে ২০১৭ সালের এ দিনে বাংলাদেশে প্রবেশ শুরু করে। চরম অসহায়ত্বের আবরণে এসে রোহিঙ্গা ‘আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা’ নিরঙ্কুশ মানবিক সহায়তা পেয়েছিল সেদিন। স্থানীয় পর্যায়ে শুরু হওয়া সহযোগিতা আন্তর্জাতিকতায় উঠে পাল্টে গেছে রোহিঙ্গাদের অসহায়ত্বের চিত্র।
বাংলাদেশ সরকারের আন্তরিকতায় দেশি-বিদেশি সংস্থার অর্থায়নে রাখাইনের দুর্বিষহ জীবন-যন্ত্রণা অনেকটা ভুলে গেছে রোহিঙ্গারা। ইতোমধ্যে প্রায় ২৩ হাজার রোহিঙ্গার নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত হয়েছে ভাসানচরে। কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকা থেকে সরিয়ে তাদের সেখানে স্থানান্তরিতও করা হয়েছে। নিজ দেশের চেয়ে বেশি স্বাধীনতা নিয়ে আশ্রিত দেশে অবাধে বিচরণ করছে তারা।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নানাভাবে চেষ্টার কমতি নেই। তবে মিয়ানমারের টালবাহানার কারণে এখনও পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই বললে চলে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯। এসব কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ও সম্ভাবনা দিন দিন ক্ষীণ হচ্ছে বলে মনে করেন অনেকেই। তবে প্রত্যাবাসন নিয়ে এখনও আশাবাদী বিশেষজ্ঞ মহল।
এদিকে সচেতন রোহিঙ্গাদের অভিযোগ প্রত্যাবাসনের বদলে বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের অপরাধী প্রমাণে মরিয়া হয়ে উঠেছে মিয়ানমার সরকার। এজন্য তারা বিপথগামী রোহিঙ্গাদের দিয়ে ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। ২০১৯ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলাটি প্রশ্নবিদ্ধ করাই তাদের লক্ষ্য। এ কারণেই বিশ্ব দরবারে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী হিসেবে তুলে ধরার সবরকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
রোহিঙ্গা নেতা হামিদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা আমাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে চাই। তবে মিয়ানমার সরকার একদিকে আমাদের ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলছে, অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের যাতে আর মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে না হয় তার জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা চালাচ্ছে।’
তার দাবি, ক্যাম্পে এখন যেসব সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলছে সবই হচ্ছে মিয়ানমারের ইশারায়। তারা বিপদগামী কিছু রোহিঙ্গাকে ব্যবহার করে আল-ইয়াকিন ও আরসার নাম ভাঙিয়ে ক্যাম্পে নানা ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। এসব রোহিঙ্গাকে আর্থিকভাবে সহায়তা দিচ্ছে মিয়ানমার।