
নিউজ পয়েন্ট সিলেট
বুধবার, ৫ মে, ২০২১
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে নিহতরায়হান আহমদ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র কোর্ট কাছে হস্তান্তর করেছে।
নিহত রায়হান আহমদ (৩৩) সিলেট নগরীর জালালাবাদ থানাধীন নেহারিপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
আজ বুধবার (৫ মে) সকাল ১১টায় পিবিআই তদন্তকারী দল সিলেট কোর্ট ইন্সপেক্টর প্রদীপ কুমার দাসের কাছে অভিযোগপত্রটি হস্তান্তর করে।
অভিযোগপত্রে এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ ৫ পুলিশ ও আকরকে পালাতে সহযোগীতাকারি সিলেট কোম্পানীগঞ্জের আব্দুল্লা আল নোমান নামের এক যুবকসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
নোমানের বিরুদ্ধে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সিসিটিভির হার্ডডিস্ক বদল করার অভিযোগ রয়েছে। এদের মধ্যে নোমান ছাড়া সবাই কারাগারে রয়েছেন।
অভিযোগপত্রে অভিযুক্তরা হচ্ছেন, বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া, টুআইসি এসআই হাসান আলী, এএসআই আশেকে এলাহী, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও আব্দুল্লাহ আল নোমান।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন কোর্ট ইন্সপেক্টর প্রদীপ কুমার দাস বলেন, বহুল আলোচিত রায়হান হত্যা মামলার অভিযোগপত্র পিবিআই পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
করোনাভাইরাসের কারণে আদালতের কার্যক্রম ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে চলার কারণে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হচ্ছে না। পিবিআই দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে এসআই আকবরসহ ৫ পুলিশকে অভিযুক্ত করেছে। এছাড়া কোম্পানীগঞ্জের আব্দুল আল নোমান নামের আরেকজন যুবককে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ৫জন কারাগারে থাকলেও নোমানকে পলাতক দেখানো হয়েছে অভিযোগপত্রে।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম এ ফজল চৌধুরী জানান, পিবিআই দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে আপাতত কোন অসংঙ্গতি চোখে পড়েনি। তবে অভিযোগপত্রসহ অন্যান্য কাগজপত্র তুলার পর বিস্তারিত জানা যাবে। এরপর অভিযোগপত্র নিয়ে করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
গত বছরের ১১ অক্টোবর মধ্যরাতে টাকা আদায়ের লক্ষ্যে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে বর্বর নির্যাতন চালানো হয় রায়হান আহমদের ওপর। এসআই আকবরের নেতৃত্বে তার হাতের নখ তুলে নেওয়া হয়। সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের রিপোর্টে রায়হানের শরীরে ১১১টি আঘাতের চিহ্নের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এমন বর্বর নির্যাতনে মারা যান রায়হান। মৃত্যুর পর ছিনতাইকারী আখ্যা দিয়ে হত্যাকাণ্ডকে ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা চালায় বন্দর ফাঁড়ির পুলিশ। রায়হানের পরিবারের অভিযোগ, প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা ও আদালতে আসামিদের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে টাকার জন্য ফাঁড়িতে পিটিয়ে হত্যার বিষয়টি উঠে আসে। এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে হেফাজতে মৃত্যু নিরোধ আইনকে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১১ অক্টোবর রাতে রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে আসা হয়। সেখানে মারধরের এক পর্যায়ে রায়হান অসুস্থ হয়ে পড়লে ১২ অক্টোবর ভোরে সিএনজি অটোরিকশা করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রায়হানের শরীরে একাধিক লাঠির আঘাত পাওয়া যায়।