1. [email protected] : Joyanta Goswami : Joyanta Goswami
  2. [email protected] : Developer :
  3. [email protected] : News Point : News Point
শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:০৮ পূর্বাহ্ন

নিউজ পয়েন্ট সিলেট

শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২০

মেরে পুড়িয়ে ফেলা সহিদুন্নবী ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী, ভুগছিলেন মানসিক রোগে


নিউজ পয়েন্ট ডেস্ক:: লালমনিরহাটের পাটগ্রামে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার পর আগুনে পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় তোলপাড় চলছে সারাদেশে। এরমধ্যে নিহতের পরিচয়ও পাওয়া যাচ্ছে। নিহত ব্যক্তি আবু ইউনুছ মোঃ সহিদুন্নবী জুয়েল (৫০) রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের লাইব্রেরিয়ান ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ছিলেন বলেও জানা যাচ্ছে। পাটগ্রামের বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি নিহত হন।

নিহত সহিদুন্নবী বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক রোগে ভুগছিলেন বলে জানা গেছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ছিলেন। তার ফেসবুক প্রোফাইল থেকেও এ তথ্য মিলেছে। তবে কোন বিভাগের ছাত্র ছিলেন, সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক ছাত্র এবং একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি নিজে সহিদুন্নবীর ছাত্র ছিলেন। এছাড়া তার বাবাও নিহতের সহকর্মী ছিলেন বলে জানান তিনি।

ওই ছাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, সহীদুন্নবী রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের লাইব্রেরিয়ান পদে দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন। মাঝেমধ্যে ক্লাসও নিতেন। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। অজ্ঞাত এক কারণে চাকরিচ্যুত হন তিনি। এরপর বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন এবং অস্বাভাবিক আচরণ করতেন। তাকে এভাবে মারার ঘটনা ঘটনা মানবতার ওপর চরম আঘাত এবং নোংরা ও হিংস্রতার বহিঃপ্রকাশ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে রংপুর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাজিব বসুনীয়া জানান, সহিদুন্নবী জুয়েলের বাড়ি রংপুরে। তিনি ক‍্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের লাইব্রেরিয়ানের কাজ করতেন। এক বছর আগে তার চাকরি চলে যায়। তখন থেকে কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। বুধবার সকালে তার বন্ধু সুমনের সঙ্গে বাসা থেকে বের হওয়ার পর আর ফেরেননি।

লালমনিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘সহিদুন্নবী জুয়েল ও তার সঙ্গী সুলতান জোবায়ের আব্বাস (৫১) বুড়িমারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় বাজার মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করতে যান। এই দুজনের বাড়িই রংপুরে। তিনি বলেন, সহিদুন্নবী মসজিদের সেলফ থেকে ধর্মীয় বই নিয়ে পড়তে যান। এ সময় তাক থেকে একটি কোরআন শরিফ নিচে পড়ে যায়। এতে কিছু মুসল্লির ধারণা হয়, ইচ্ছা করেই কোরআন শরিফ ফেলে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ধর্ম অবমাননার গুজব আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে।’

তিনি বলেন, ‘গুজব ছড়িয়ে যাওয়ার কারণে মানুষ মনে করেছে তারা কোরআন অবমাননা করেছে। কিন্তু এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। উত্তেজিত জনতা এক পর্যায়ে মারমুখী হয়ে ওঠে। ওখানে ইউএনও, পুলিশ ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন। কিন্তু তারা তাকে (সহিদুন্নবী) রক্ষা করতে পারেনি।’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এবং কয়েকজন মুসল্লি সহিদুন্নবী ও জোবায়েরকে উদ্ধার করে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের ভিতরে নিয়ে যান। এ সময় উত্তেজিত মুসল্লিরা বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও করেন। পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে মুসল্লিদের বিশাল বিক্ষোভ মিছিল গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের দরজা ভেঙে সহিদুন্নবীকে পিটিয়ে হত্যা করে। এরপর মৃতদেহ ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের বাইরে এনে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়।

সহিদুন্নবীর সঙ্গে থাকা জোবায়েরকে উদ্ধার করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় তিনটি মামলা হতে পারে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম। তবে সহিদুন্নবী ও জোবায়ের কেন রংপুর থেকে লালমনিহাটে গিয়েছিলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা কারণ সম্পর্কে জানতে পারিনি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তবে যেখান থেকেই আসুক তারা তো যে কোনো মসজিদে নামাজ পড়তে যেতেই পারে।’

আপনার মতামত দিন
এই বিভাগের আরও খবর

সিলেটের সর্বশেষ
© All rights reserved 2020 © newspointsylhet