নিউজ পয়েন্ট সিলেট
বুধবার, ২১ এপ্রিল, ২০২১
একটি অনলাইন নিউজপোর্টালের একজন সাংবাদিক লাইভ করছিলেন। লাইভের শেষমুহূর্তে এক পথশিশু সেখানে চলে আসে। লাইভেই তাকে বলতে শোনা যায়, ‘যে লকডাউন দিয়েছে, সামনে ঈদ, মানুষ খাবে কী? লকডাউন দিয়েছে এটা ভুয়া।’ এ ঘটনার পর কে বা কারা ওই পথশিশুকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ভিডিও ও শিশুটিকে মারধরের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে।
তবে তাকে কবে কারা মেরেছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, মারধরের ফলে শিশুটির চোখ-মুখ ফুলে গেছে। এ ঘটনার পর ওই শিশুটিকে খুঁজে বের করেছেন পারভেজ হাসান নামে একজন স্বেচ্ছাসেবী। তার একটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।
পারভেজ লিখেছেন, ‘একজন পথশিশু ছেলেটি। শিক্ষিত রাষ্ট্রের শিক্ষিত ব্যক্তিদের মতো আচরণ এখনো শেখেনি। তাই হয়তো সাংবাদিক যখন লাইভ করে, তখন মজার ছলে সামনে ঈদ লকডাউন দিলে গরীব মানুষ খাবে কী? এই লকডাউন ভুয়া। এটুকুই বলেছে। পরিণামে অনেকেই অনলাইনে প্রশংসা করলেও কে-বা কারা তাকে মেরেছে, চোখমুখ ফুলিয়ে দিয়েছে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে ছেলেটি কি একবারও কথাটা মিথ্যা বলেছে?’
তিনি লেখেন, ‘ও দারিদ্র্য, ক্ষুধা কী ওর থেকে ভালো কেও জানে না। তাই মনের ভেতর যে সত্যটা আসছে তাই মুখে বলে দিয়েছে। তার জন্য গায়ে হাত তুলতে হবে? ছেলেটিকে আমি খুঁজছি। কেউ যদি তাকে খুঁজে পাবার একটু ক্লু দিতে পারেন উপকার হয়। তার পড়াশোনা থেকে যাবতীয় দায়িত্ব নেওয়ার ইতিমধ্যেই প্রস্তাব এসেছে। খুঁজে পেলে ইনশাআল্লাহ ওর সাথে এবার ভালো কিছুই হবে আশাবাদী।’
পরে অবশ্য ওই শিশুকে খুঁজেও পেয়েছেন। তার সঙ্গে আরেকটি ছবি তুলে দ্বিতীয় পোস্টে পারভেজ হাসান লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ অসম্ভব পরিশ্রম করে ওকে খুঁজে বের করলাম।’ এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন বলে পোস্টে তিনি উল্লেখ করেছেন।
এদিকে ওই শিশুর ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন আরও অনেকে। মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক ছাত্রনেতা লিখেছেন, ‘ক্ষমতার দম্ভ তাদের এতই অন্ধ করে ফেলছে যে, এতটুকু একটা পথশিশু বাচ্চার সমালোচনা সহ্য করার মানসিক শক্তিও তারা হারিয়ে ফেলেছে। এই বাচ্চা ছেলেটার গায়ে হাত তুলতে তাদের বিবেক এতটুকু কাঁপলো না!’
তিনি লেখেন, ‘সে তো অযৌক্তিক কিছু বলেনি। অন্য অনেকেই যা বলতে চেয়েও বলেনি, সে স্বাচ্ছন্দ্যে তা বলে দিয়েছে। এটা কি খুব বেশী অপরাধের কাজ হয়ে গেল ? দুঃখজনক। তবে সবকিছুরই যে একটা শেষ আছে,এটা মনে হয় তারা ভুলে গেছে। সময় নিশ্চয়ই এর উপযুক্ত জবাব দেবে।’