নিউজ পয়েন্ট সিলেট
সোমবার, ১২ এপ্রিল, ২০২১
বিনোদন ডেস্কঃ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে জনপ্রিয় ও নন্দিত সঙ্গীত শিল্পী টুম্পা দেবীর প্রথম গান। গানটির শিরোনাম ‘কালার প্রেমে এত জ্বালা’। গত ১০ এপ্রিল শনিবার রাতে গানটি প্রকাশিত হওয়ার পর দর্শক-শ্রোতার মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে।
গানটির সাথে নজরকাড়া মিউজিক ভিডিও দর্শক-শ্রোতাকে মুগ্ধতায় ভাসিয়েছে। সবার প্রিয় সঙ্গীত শিল্পী টুম্পা দেবীর ‘কালার প্রেমে এত জ্বালা’ গানটি লিখেছেন ও সুর করেছেন জিয়াউর রহমান জিয়া।
সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন দেবাশীষ দে পল্লব। ‘কালার প্রেমে এত জ্বালা’ গানটি amar bangla mb ইউটিউব চ্যানেল থেকে গত শনিবার প্রকাশিত হয়। প্রকাশের পর থেকেই দর্শক-শ্রোতার হৃদয়ে গানটি আলাদাভাবে স্থান করে নেয়। দ
গানটি প্রসঙ্গে প্রতিশ্রুতিশীল সঙ্গীত শিল্পী টুম্পা দেবী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চাইছিলাম শ্রোতাদের মন-প্রাণ রাঙিয়ে দিতে একটি গান প্রকাশ করবো।
টুম্পা দেবী জানান, গুণী গীতিকার ও সুরকার জিয়াউর রহমান জিয়া ভাইর ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় এই গানটি প্রকাশ হয়। তাঁর মতো গুণী মানুষের সাথে কাজ করায় তিনি গর্বিত। আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই এবং এই গুণী মানুষটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
আমি অগণিত মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হওয়ার জন্য বর্ণিল সুরের আলোয় ডুবে থাকবো। সেই স্বপ্ন-আশা বাস্তবায়নের একটি প্রচেষ্টা হল ‘কালা প্রেমে এত জ্বালা’ গানটি। এ গানটি অনেক দিন, অনেক পরিশ্রম করে সাজানো হয়েছে। দর্শক-শ্রোতাদের চাহিদার প্রতি খেয়াল রেখে গানটি তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ গানের জন্য দর্শক-শ্রোতাদের অপরিসীম ভালোবাসা পাওয়ায় আমি সত্যি অভিভূত ও আনন্দিত।
মানুষের এ ভালোবাসার প্রতি আমার শ্রদ্ধা থাকবে আজীবন। আমৃত্যু চেষ্টা করবো বাংলা গানের সঙ্গে থাকার। বাংলা গানকে ভালোবেসেই অনাদিকাল গানের ভুবনে অবাধ বিচরণ করবো। গান ছেড়ে অন্য কোথাও যাব না। গানই আমার জীবনের আলোকবর্তিকা।
টুম্পা দেবী জানান, মিউজিক ভিডিওতে একটি শিক্ষণীয় বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমান যুগে আমাদের যুবসমাজের একটা বড় অংশ মোবাইল ফোন/ইমু/ওয়াটসঅ্যাপ/ফেইসবুকে অপরিচিত কারো সাথে কথাবার্তা বলার মাধ্যমে গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে বিপথগামী হচ্ছে। সে এবং তাঁর পরিবারের জন্য সংকটময় করুণ পরিস্থিতি ডেকে আনছে। এই বিষয়টি মিউজিক ভিডিওতে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
টুম্পা দেবী খুব ছোট বেলাই গানের প্রেমে পড়ে যান। তাঁর বাসায় গানের একটি সৃজনশীল পরিবেশ থাকায় টুম্পার মনে গানের প্রতি অন্যরকম ভালোবাসা তৈরি হয়। ৫ বোন, ২ ভাই আর অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা পিতা নীলমণি দেবনাথ ও মা স্বরসতী দেবনাথের সুখের সংসারে টুম্পা দেবনাথ গানকেই জীবনের সঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছেন। টুম্পা দেবী ১১ বছর বয়সে মৌলভীবাজারের খ্যাতনামা সঙ্গীত শিক্ষক বিজয় বৈষ্ণব-এর কাছে সঙ্গীতের প্রথম হাতেখড়ি নেন।
তারপর সকাল, দুপুর ও রাতে সঙ্গীতের অনুশীলনে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন। এখনো সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চলেছেন। উস্তাদ গৌরাঙ্গ, উস্তাদ গোপন চক্রবর্তীর কাছেও গানের তালিম নিয়েছেন টুম্পা। ছোটবেলায় বিভিন্ন গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। আঞ্চলিক পর্যায়ে মৌলভীবাজার থেকে নিউট্রিচ্যাম প্রতিযোগিতায় ফাস্ট রানারআপ হয়েছেন টুম্পা। জাতীয় পর্যায়ে গিয়েও একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান নেন তিনি। গানের মানুষ টুম্পা দেবী গান গাওয়া ছাড়াও পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছেন। টুম্পা দেবী বলেন, অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে আয়োজিত এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে টুম্পা দেবী জীবনের প্রথম গান গেয়েছিলেন। সেদিন সেই অনুষ্ঠানে অগণিত দর্শক-শ্রোতার হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা ও হাততালি টুম্পাকে সুরের ঝর্ণাধারায় এগিয়ে চলার শক্তি-সাহস যোগায়। বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীর ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা কখনো ভোলার নয়। তাঁরা আমার আলোর দিশারী। তাঁদের নিবিড় ভালোবাসা আমার চলার পথের পাথেয়।
টুম্পা দেবী গান ছাড়া অন্যকিছু বোঝেন না। অষ্ট্রপ্রহর গানের ইন্দ্রজালে ডুবে থাকতে ভালোবাসেন। তিনি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বিষয়ে বিশেষ তালিম নিতে আগ্রহী। রাগ-রাগীনির সুরের প্লাবনে ভেসে বেড়াতে তাঁর খুব ইচ্ছে। তিনি বলেন, সঙ্গীত সাধনার বিষয়। সঙ্গীত গুরুমুখী বিদ্যা। সাধন-ভজন ছাড়া সঙ্গীতে কিছু করা যায় না। আমি সাধনায় বিশ^াসী। আমি সঙ্গীত সাধনা করবো। গানের সাতরঙ ছোঁব।
মৌলিক গানে আরো কিছু কাজ করার প্রত্যয় টুম্পার। সৃজনশীল ও নান্দনিক কথা, সুর এবং সঙ্গীত নিয়ে বেশ কিছু গান দর্শক-শ্রোতাতে উপহার দেয়ার প্রবল ইচ্ছে রয়েছে টুম্পার। সেই কাজও শুরু হয়ে গেছে। বৈশি^ক মহামারি ভয়াবহ করোনাভাইরাসের জন্য কাজে কিছুটা মন্থর গতি চলছে বলে টুম্পা জানিয়েছেন। তবে টুম্পা ভীষণ আশাবাদী। সুদিন আসবে। সুখ-শান্তির আলো জ¦লবেই। মানুষের জয়জয়কার হবেই।
জননন্দিত কথাসাহিত্যিক ও নাট্যকার হুমায়ুন আহমদ এবং বিশ^কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর লেখা টুম্পা দেবী দারুণ পছন্দ করেন এবং নিয়মিত পড়েন। তাঁদের লেখা টুম্পার কাছে অসাধারণ, অনন্য লাগে। তিনি সময় পেলেই তাঁদের বইয়ের পাতায় চোখ রাখেন। মাধুর্যভরা কণ্ঠের সম্ভাবনাময় কণ্ঠশিল্পী টুম্পা উপমহাদেশের কিংবদন্তী শিল্পী লতা মঙ্গেশকর, রুনা লায়লা, মান্না দে ও হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গান ভীষণ ভালোবাসেন। সময়-সুযোগ পেলে এ সকল বরেণ্য গুণীজনদের গান শোনেন এবং তাঁদের গান এক মঞ্চ থেকে অন্য মঞ্চে গেয়ে বেড়ান।
ঋতুরাজ বসন্তকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসা শিল্পী টুম্পার মূল বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলা দক্ষিণ সুনামগঞ্জের মানিকপুরে। বর্তমানে বসবাস করেন মৌলভীবারে। কণ্ঠশিল্পী টুম্পা দেবী সঙ্গীত জগতের রঙধনু রঙে নিজেকে উদ্ভাসিত করুন। তাঁর মমতা মাখানো কণ্ঠের কারুকার্যে নান্দনিক মুগ্ধতায় ভাসিয়ে দিন ত্রিভুবন।
গানের ভিডিও লিংক: https://www.youtube.com/watch?v=_Ib_yeIIedY
নিউজ পয়েন্ট সিলেট/বিঃ১২৩