
নিউজ পয়েন্ট সিলেট
বৃহস্পতিবার, ২০ মে, ২০২১
ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটা ও গ্রামে যাতায়াতে বিপুল লোকসমাগমের কারণে ঈদুল ফিতরের পর দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছিল। ঈদের পর টানা চার দিন ধরে সংক্রমণে আবার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাওয়ায় সেই আশঙ্কাই সত্যি হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ১৬ মে থেকে সংক্রমণ রেখা আবারও ঊর্ধ্বমুখী। ঈদের ছুটি শেষে কোভিড-১৯ শনাক্তের পরীক্ষা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন রোগীও প্রতিদিন বাড়ছে। সে সঙ্গে মৃত্যুও বাড়তে দেখা যাচ্ছে। আগামী সপ্তাহে সংক্রমণে আরও ঊর্ধ্বগতি দেখা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্যবিদেরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১ হাজার ৬০৮ জন নতুন রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছে। এটি গত ১২ দিনের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী শনাক্তের রেকর্ড। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা এক সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। চলতি বছরের মার্চ থেকে দেশে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ৫ এপ্রিল থেকে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করে সরকার। কিছুটা শিথিল হলেও সে লকডাউন এখনো চলছে।
লকডাউনের প্রভাবে এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ নিম্নমুখী হতে শুরু করে। তবে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে বিধিনিষেধ ঢিলেঢালা হয়ে পড়ে। ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটা ও যাতায়াতে বিপুল লোকসমাগম দেখে জনস্বাস্থ্যবিদেরা এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আশঙ্কা করেছিল, ঈদের পর সংক্রমণ আবার বেড়ে যাবে।
শুরু থেকে গতকাল পর্যন্ত দেশে মোট ৭ লাখ ৮৩ হাজার ৭৩৭ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এর মধ্যে ৭ লাখ ২৬ হাজার ১৩২ জন সুস্থ হয়েছেন। আর মারা গেছেন ১২ হাজার ২৪৮ জন। মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় গতকাল পর্যন্ত দেশে করোনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনলাইন বুলেটিনে অধিদপ্তরের অন্যতম মুখপাত্র রোবেদ আমিন বলেন, চলমান লকডাউন কিছুটা ফলপ্রসূ হয়েছে বলেই সংক্রমণ নিম্নমুখী হয়েছে। কিন্তু এটা নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই। ইতিমধ্যে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (করোনার রূপান্তরিত ধরন) দেশে চলে এসেছে এবং কিছুটা চোখ রাঙাচ্ছে।
তিনি বলেন, যেকোনো সময় পূর্ণ সংক্রমণ শুরু হতে পারে। এ জন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে না চললে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত ছড়িয়ে যেতে পারে। অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে এই ভ্যারিয়েন্টের ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা বেশি।