নিউজ পয়েন্ট সিলেট ডেস্কঃ ২০০ দিন ধরে কারাগারে সুনামগঞ্জের শাল্লার ঝুমন দাস।
তার অপরাধ হেফাজতের বিতর্কিত সাবেক নেতা মামুনুল হককে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া। এলাকার প্রভাবশালীরা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিলেও এখন কেউ নেই তার পাশে। পরিবারের অভিযোগ ৫ বার জামিন চেয়েও পাননি তিনি। আইনজীবীদের প্রশ্ন এত দিনেও জামিন না পাওয়া অস্বাভাবিক।
হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ড নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ উঠে সুনামগঞ্জের শাল্লার ঝুমন দাসের বিরুদ্ধে। এলাকার প্রভাবশালীদের আশ্বাসে ১৬ মার্চ ঝুমনকে তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। পুলিশও তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে। সেই থেকেই ৬ মাস ধরে জেলে ঝুমন।
ঝুমনের পোস্টকে কেন্দ্র করে হেফাজত কর্মীদের হামলায় হিন্দুদের ৯০টি বাড়ি ও সাতটি পারিবারিক মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ঘটনাতেও হয় মামলা। গ্রেপ্তার করা হয় বেশ কয়েকজনকে। যাদের প্রায় সবাই জামিনে রয়েছে। মামুনুল হকও সাম্প্রদায়িক উসকানিসহ বিভিন্ন মামলায় কারাগারে। তাহলে কেন জামিন পাচ্ছেন না ঝুমন দাস?
পরিবার-পরিজন জানান, ঝুমনের নামে করা মামলাটা হাইকোর্টে গিয়ে জামিন নামঞ্জুর হয়েছে। পরে জানতে পারলাম ঝুমনের নিরাপত্তার কারণে এটা করা হয়েছে। যারা আমাদের বাড়িঘর ভেঙেছে অত্যাচার করেছে তারা মুক্তি পেয়েছে, তারা জামিনে মুক্ত হয়ে ঘোরাফেরা করছে আর ঝুমন জামিন পায়নি।
ঝুমনের স্ত্রী জানান, আমার সামনে অপরাধীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে, আমার স্বামী নিরপরাধ হয়েও জেল খাটছে এটি আমি চাই না। আমি তার মুক্তি চাই। ঝুমনের দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছে তার পরিবার।
তার ভাই বলেন, সরকারের বাছে আমাদের আকুল আবেদন যেন আমার ভাইটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আইনজীবীর প্রশ্ন- ঝুমন দাস প্রভাবশালী হলে হয়তো এত দিন জামিন পেয়ে যেত?
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ বলেন, ঝুমনের দাসের নামে যে অভিযোগ এসেছে সেখানে তার সম্পৃক্তা খুবই কম। নামকরা লোক যদি হয় সেক্ষেত্রে অনেক উচ্চস্তরের লোকজন অনেক কথা বলেন। আর আদালতেও অনেক সময় জামিনের ব্যাপারে সময় এগিয়ে এনে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়ে যায়। কিন্তু ঝুমন দাসের ব্যাপারে কিছু হচ্ছে না, এটি আমাদের কাছে প্রশ্ন তাহলে সে সাধারণ ঘরের নাগরিক দেখে কি হচ্ছে না?
ঝুমনের জামিন না হওয়া উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশিষ্ট নাগরিকরা। বিচারিক আদালতে ৫ বার না পেলেও তাই উচ্চ আদালতের দিকে তাকিয়ে ঝুমনের পরিবার ও আইনজীবীরা।
নিউজ পয়েন্ট সিলেট/এস টি/ এস শর্মা