
নিউজ পয়েন্ট সিলেট
বৃহস্পতিবার, ১০ জুন, ২০২১
নিউজ পয়েন্ট সিলেট ডেস্কঃ সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় নান্দনিক শৈলীতে নির্মিত মডেল মসজিদের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আধুনিক ও সুসজ্জিত এই মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে প্রয়াত সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর কথা স্মরণ করে বলেন- ‘আজ কয়েস থাকলে অনেক বেশী খুশি হতো।’ পরে বক্তব্যের আরেক অংশে তিনি সবার জন্য দোয়া চাইতে গিয়েও মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর জন্য দোয়া চান।
এদিকে, ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আধুনিক ও সুসজ্জিত এই মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন অনুষ্টানে প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আর কেউ প্রয়াত সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর কথা স্মরণ করেন নি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষজন।
স্থানীয়রা মতে, দক্ষিণ সুরমায় এই মডেল মসজিদ যার প্রচেষ্টায় আজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যিনি প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে এই মডেল মসজিদ বাস্তবায়ন করেছেন, কেউ তাঁকে আজ স্মরণ করলো না এটা সত্যিই দুঃখজনক। এজন্য প্রয়াত সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর আত্মা কষ্ট পেয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
মোগলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আইয়ুব আলী সিলেট প্রতিদিনকে বলেন- যার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় সিলেট বিভাগের মধ্যে প্রথম মডেল মসজিদ দক্ষিণ সুরমায় বাস্তবায়ন হলো তাঁকে স্মরণ না করা স্থানীয় প্রশসান ও নেতৃবৃন্দের হীনমন্যতার পরিচয়। তিনি বলেন, যেখানে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী একাধিক বার প্রয়াত সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীকে স্মরণ করলেন, সেখানে স্থানীয় প্রশাসন কিংবা আওয়ামী লীগের কেউ তাঁকে স্মরণ না করাটা অন্তত্য দুঃখজনক।
বৃহস্পতিবার (১০ জুন) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে একযোগে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কমপ্লেক্সের পাশে আধুনিক ও সুসজ্জিত এই মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এছাড়াও এই অনুষ্ঠানে দেশের মোট ৫০টি মডেল মসজিদের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসময় দক্ষিণ সুরমা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল আহাদ ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার আওয়ামীলীগের বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল আলম বক্তব্য রাখেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সিলেটের জেলা প্রশাসক কাজী এমদাদুল ইসলাম, সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবু জাহিদ, জেলা আওয়ামীলীগরে সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আহমদ সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
জানা যায়, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স লাগোয়া ৪০ শতক জায়গার উপর তিনতলা বিশিষ্ট এই মসজিদের আয়তন ১ হাজার ৬৮০ দশমিক ১৪ বর্গমিটার।
আরব বিশ্বের মসজিদ কাম ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের আদলে এসব মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত সুবিশাল এসব মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক ভবনে নারী ও পুরুষের আলাদা ওজু ও নামাজ আদায়ের সুবিধা থাকবে। থাকবে লাইব্রেরি, গবেষণা কেন্দ্র, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, কোরআন হিফজ বিভাগ, শিশু শিক্ষা, অতিথিশালা, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন।
এছাড়া মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ, ইমামদের প্রশিক্ষণ, অটিজম কেন্দ্র, গণশিক্ষা কেন্দ্র, ইসলামী সংস্কৃতি কেন্দ্র থাকবে। ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা এবং গাড়ি পার্কিং সুবিধাও রাখা হয়েছে মডেল মসজিদে।
৪০ শতাংশ জায়গার ওপর তিন ক্যাটাগরিতে এই মসজিদগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। জেলা পর্যায়ে চারতলা, উপজেলার জন্য তিনতলা এবং উপকূলীয় এলাকায় চারতলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সংস্কৃতিকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।
উপজেলা পর্যায়ে প্রতিটি মসজিদে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ কোটি ৪১ লাখ এবং জেলা পর্যায়ে মসজিদ নির্মাণ ব্যয় ১৫ কোটি ৬১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সিলেট বিভাগে ৪৩টি মসজিদ নির্মাণে ব্যয় হবে ৫৮৫ কোটি ৭৭ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।